ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫ , ২৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
অপরাজেয় বায়ার্নকে রুখে দিলো ইন্টার মিলান আর্সেনালকে আনচেলত্তির হুমকি রিয়ালের সাথে জয় পেলো আর্সেনাল প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের সাথে বড়ো জয় পেলো বাঘিনীরা আইপিএল বাদ দিয়ে পিএসএল দেখবেন দর্শকরা-হাসান আলি পারিশ্রমিক বকেয়া ইস্যুেত অনুশীলন বয়কট করলো পারটেক্সের ক্রিকেটারা পাকিস্তানে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেলেন লিটন ও রিশাদ টাইগারদের নতুন ফিল্ডিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পেলেন জেমস প্যামেন্ট নাসার সঙ্গে আর্টেমিস চুক্তি স্বাক্ষর বেড়েছে আদানির বকেয়া পরিশোধ ও বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনে ৫৫ বিনিয়োগকারী ৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা পেছাতে পিএসসিতে পরীক্ষার্থীদের অবস্থান এসএসসির পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের গুজব ছড়ালে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বাংলাদেশে আরও এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এনডিবি প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে পাইলট প্রকল্প চালু করবে ইসি ক্রয়াদেশ স্থগিত করছেন মার্কিন ক্রেতারা নকল ঠেকাতে কঠোর নির্দেশনা মাউশির আবারও ফেসবুক লাইভে এলেন শেখ হাসিনা হাসিনাকে নিয়ে মোদির সঙ্গে চূড়ান্ত কথা হয়নি-পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হাসিনাকে নিয়ে মোদির সঙ্গে চূড়ান্ত কথা হয়নি-পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

মামলা নিয়ে চিন্তিত নয় আওয়ামী লীগ

  • আপলোড সময় : ২৬-০৯-২০২৪ ০১:০১:২২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৬-০৯-২০২৪ ০১:০১:২২ পূর্বাহ্ন
মামলা নিয়ে চিন্তিত নয় আওয়ামী লীগ
* নিরাপদে এলাকায় ফিরতে গ্যারান্টি হিসেবে টাকা দিতে হচ্ছে আ’লীগের নেতাকর্মীদের
* গড়ে একেক মামলায় আসামি করা হয়েছে ৭০ ৮০ জন
* দেশে অবস্থানরত নেতারা গ্রেফতার আতঙ্কে
* এলাকায় ফিরেও ঘরবন্দি


ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার পলায়নের পর দেশজুড়ে অন্ধকার নেমে আসে আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায় থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতা-এমপি ও মন্ত্রীদের কপালে। শুরু হয় তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে আগুন-ভাংচুর, লুটপাটের মতো ঘটনা। বাদ যায়নি আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি-ঘরও। গত ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবউদ্দিন। পরাজিত সরকারের কর্মী-সমর্থক, মন্ত্রী-এমপি এবং দোসর হিসেবে কিছু সাংবাদিকদের নামে-বেনামে মামলা দেয়া হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। এসব মামলা ও হামলার ভয়ে গত দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে ঘরছাড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাই সমঝোতার মাধ্যমে নিজ নিজ এলাকায় (পরিবার-পরিজনের কাছে) ফিরতে চান সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু হঠাৎ এলাকায় ফিরলে যে হামলার শিকার হতে পারেন, তাদের মধ্যে সেই ভয়ও কাজ করছে। সেজন্য এলাকায় এখন যারা প্রভাবশালী, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তারা। তবে আপাতত তাদের নামে যে মামলা হচ্ছে, তা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয় দলটির নেতারা। সম্প্রতি এ নিয়ে বিবিসি বাংলা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অনেক মন্ত্রী-এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতা। তবে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি অংশ দেশ ছেড়ে পালাতে পারেননি। তাদের অনেকে আত্মগোপনে এখনও দেশে রয়েছেন। দেশে-বিদেশে অবস্থানরত এসব নেতাকে আসামি করে কয়েকশ মামলা এরইমধ্যে করা হয়েছে। একদিকে থানা, আরেকদিকে আদালতে করা হচ্ছে একের পর এক মামলা। এ কার্যক্রম এখনও চলমান রয়েছে। তবে তাতে খুব একটা আক্ষেপ নেই আওয়ামী লীগের অনেক নেতাদেরই। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সব স্তরের আওয়ামী লীগ নেতারা গা ঢাকা দেয়। অনেক খুঁজেও তাদের দেখা মেলেনি। এদের কেউ বৈধ, কেউবা অবৈধ পথে দেশ ছেড়েছেন। আবার দেশ ছাড়তে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধরাও পড়েছেন অনেকে। তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই এরইমধ্যে দেশ ছাড়তে পেরেছেন। বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারাও দেশে নেই। স্থানীয় নেতা, জনপ্রতিনিধিদেরও অনেকেই প্রবাসে। দেশে এবং বিদেশে অবস্থান করা এসব নেতার বেশিরভাগকেই শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর করা বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের অনেকেই ডজন খানেক মামলায়ও আসামি হয়েছেন। সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা এসব ‘মামলা টিকবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে কথা হয় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, মামলা তো দিয়েছে, দিচ্ছে। এসব মামলায় গড়পড়তা সবাইকে আসামি করা হচ্ছে। এসব মামলা টিকবে না, এটা সবাই জানে। এগুলো হচ্ছে আমাদেরকে মাঠ থেকে দূরে রাখার একটা কৌশল। একই ধারণা পোষণ করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের একজন জনপ্রতিনিধি। তিনি বলেন, কিছু মামলার কাগজ তো দেখেছি। যে যেখানে ছিল না, সেখানেও তাকে আসামি করা হয়েছে। একেক মামলায় আসামি করা হয়েছে ৭০-৮০ জনকে। টপ-টু-বটম সবাই আসামি। এগুলো যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা তা সবার কাছেই স্পষ্ট। টার্গেট করে এসব মামলা সাজানো হচ্ছে এটাও সবাই বুঝে। আমরা তাদের এই মামলার রাজনীতি নিয়ে চিন্তিত না। ৫ আগস্টের পর দেশের সীমানা পেরিয়ে ভারতে অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগের সহযোগী এক সংগঠনের মহানগর পর্যায়ের এক নেতা। তিনি বলেন, এখন মামলা হচ্ছে, হবে, এটা স্বাভাবিক। তারা চাচ্ছে, আমাদেরকে মামলার ভয় দেখিয়ে দূরে রাখা। এতে আমরা চিন্তিত না।
দেশে অবস্থানরত নেতারা গ্রেফতার আতঙ্কে : গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পলায়নের মধ্যদিয়ে টানা ১৬ বছরের সমাপ্তি ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। সেই সরকারের পতনের পর গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ দলের মন্ত্রী-এমপি ও শীর্ষপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আদালত ও থানায় একের পর এক মামলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে যারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে পাশ^বর্তী দেশসহ অন্যান্য দেশে চলে গেছেন, তারা আপাতত নিরাপত্তায় রয়েছেন। তবে দেশে অবস্থান করা নেতাদের অনেকেই মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে নিস্ক্রিয় থাকার দায়ে বেশকিছু কমিটি বাতিল করে আওয়ামী লীগ। সেই পদ হারানো নেতাদেরও অনেকে মামলার আসামি। সম্পৃক্ত না থেকেও মামলার আসামি হয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের একজন নেতা। তিনি বলেন, আন্দোলনের আগে আমি ও আমার নেতারা নিস্ক্রিয় ছিল। কমিটি ভেঙে দিল। যখন কমিটি নাই, তখন আমরা মাঠে থাকব কেন? ছিলাম না। তারপরও আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। এখন নিজের বাসায় থাকতে পারি না।
নিরাপদে এলাকায় ফিরতে দিতে হচ্ছে টাকা : ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে ঘরছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। গত পাঁচই অগাস্টের পর যেভাবে তাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা হতে দেখা যাচ্ছিলো, সেটি এখন দেখা যাচ্ছে না। ফলে এখন পরিবারের কাছে ফিরতে চাচ্ছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। কিন্তু হঠাৎ এলাকায় ফিরলে যে হামলার শিকার হতে পারেন, সেই ভয়ও কাজ করছে তাদের মধ্যে। সেজন্য এলাকায় এখন যারা প্রভাবশালী, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তারা। এ বিষয়ে কথা হয় আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের একজন নেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, এটা ছাড়া তো উপায় নেই। বউ-বাচ্চা ফেলে আর কতদিন পালিয়ে বেড়াবো। বেশিরভাগ এলাকায় বিএনপি এখন নিয়ন্ত্রণ নেয়ায় দলটির নেতাদের সঙ্গেই মূলত যোগাযোগ করছেন ‘আত্মগোপনে’ থাকা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এলাকায় ফিরতে তাদের গুনতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। দক্ষিণবঙ্গের একটি জেলার ওই নেতা বলেন, চেয়েছিল তিন লাখ, পরে অনেক বলে-কয়ে এক লাখ টাকা দিয়ে ফিরছি। কিন্তু টাকাটা নিলেন কে? এ প্রশ্নের জবাবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নেতা বলেন, বড় কোনো নেতা না। আমাদের মতোই ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা। তবে তার নাম প্রকাশে রাজি হননি ওই আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি বলেন, এটা জানাজানি হলে আরও ডিস্টার্ব করবে, বোঝেনই তো। তখন পরিবার নিয়ে এলাকায় থাকতে পারবো না। একই কথা বলেছেন ক্ষুদ রাজধানীর আরও বেশ কয়েকটি থানা-ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতা। তবে কেউই তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হচ্ছেন না। যদিও তাদের কেউ কেউ এও বলছেন, প্রতিদিন অনুষ্ঠানের কথা বলে এবং দাওয়াত কার্ড নিয়ে আসছেন বিএনপির নেতারা। তাদের চাহিদা মতো সবকিছু দিতে হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের এমন অনেক নেতা আছেন যারা টাকা দিয়েও ঘরে ফিরতে পারছেন না। তেমনই একজন বলেছেন, বাড়ি ফেরার জন্য দু’জন নেতাকে দুই দফায় টাকা দিয়েছি। কিন্তু এরপর তিন সপ্তাহ চলে গেল, বাড়ি যেতে পারলাম না। কবে যেতে পারবো, সেটাও জানি না। কিন্তু টাকা দেয়ার পরও কেন এলাকায় ফিরতে পারলেন না? জবাবে তিনি বলেন, কীভাবে ফিরবো? দু’জনরে টাকা দিয়েছি শুনে এখন আরো মানুষ মোবাইল করে টাকা চায়। কতজনকে টাকা দেবো? দুই নেতাকে এখন পর্যন্ত যে দেড় লাখ টাকা দিয়েছেন, সেটিও কোনো কাজে আসবে বলে মনে করছেন না তিনি। প্রথম দফায় যারা টাকা নিয়েছেন, তারা বিএনপির স্থানীয় নেতা বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ তৃণমূলের নেতা। আর এখন যারা টাকা চাচ্ছেন, তারা বিএনপির অঙ্গসংগঠনের পরিচয় দিচ্ছেন। কেউ বলে যুবদলের নেতা, কেউ বলে স্বেচ্ছাসেবক দল। আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের ওই নেতা বলেন, ওদেরকে টাকা না দিলে নাকি এলাকায় পা রাখতে দেবে না।
ঘর বাঁচাতে ৫০ হাজার : শেখ হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীর বাড়িঘর-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটে। তখন সে যাত্রায় যারা বেঁচে গেছেন, তাদের অনেকের বাড়িতে এখন হামলার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আমি তো দেড় মাস ধরেই এলাকাছাড়া। এর মধ্যে বাড়ি এসে আমার ওয়াইফকে হুমকি দিয়ে গেছে যেন এক সপ্তাহের মধ্যে ৫০ হাজার টাকা রেডি রাখে, বলছিলেন ঢাকার কাছের একটি জেলার একজন আওয়ামী লীগ নেতা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা না দিলে বাড়িঘর ভাঙচুর করে আগুন দেয়া হবে বলেও হুমকি দিয়েছে চাঁদা দাবি করা লোকগুলো। এমনিতেই কোনো আয়-ইনকাম নেই। তারওপর এত টাকা চাঁদা কোথা থেকে দেবো, সেই চিন্তা করছি। কিন্তু চাঁদা চাওয়া লোকগুলো ঠিক কারা? আমাদের এলাকারই লোকজন। এতদিন সেভাবে রাজনীতি করতে দেখিনি। এখন বলতেছে, তারা নাকি যুবদলের, বলছিলেন ঢাকা বিভাগের একটি জেলার ওই নেতা।
এলাকায় ফিরেও ঘরবন্দী : টাকার বিনিময়ে এলাকায় ফিরতে পারলেও প্রকাশ্যে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। যাদের মাধ্যমে এলাকায় ঢুকছি, তারাই বলতেছে ঘর থেকে না বের হতে, বাইরে বের হলে অসুবিধা হতে পারে, বলেন দেড় মাস পর ঘরে ফেরা আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের একজন নেতা। এ অবস্থায় চল্লিশোর্ধ ওই ব্যক্তির সারাদিন কাটছে ঘরবন্দী অবস্থায়। হামলার ভয়ে বাইরে বের হতে না পারায় নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও খুলতে পারছেন না। বাজারে আমার একটা কাপড়ের দোকান আছে। দেড়ে মাস ধরে সেটা খোলা হয় না। সব ঠিকঠাক আছে কী-না, সেটাও জানি না। তবে এলাকায় ফেরার পর যারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাদের অনেকে হামলার শিকার হচ্ছেন বলে জানা গেছে। তেমনই একজন খুলনার ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম মুন্না। ‘আত্মগোপন’ থেকে বের হওয়ার পর সম্প্রতি তার ওপর হামলা হয়েছে, এতে মুন্না গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার এক আত্মীয়। তিন-চার জনে মিলে দৌঁড়ানি দিয়ে ওরে রাস্তায় ফেলে কুপাইছে, বলছিলেন ওই ছাত্রলীগ নেতার আত্মীয়। মুন্না বর্তমান হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি। আর লক্ষ্মীপুরে নূর আলম নামে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নে ওই ঘটনা ঘটে। এর বাইরে, গত এক সপ্তাহে বরিশাল ও চুয়াডাঙ্গায় তিনজন ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে না পারলেও হামলার শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের দায়ী করা হয়েছে।
চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর বিএনপি : আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করার সঙ্গে বিএনপির জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ যেভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে, তারপরে আমাদের নেতাকর্মীরা এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত হবে বলে মনে করেন না বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। একইসুরে কথা বলেছেন বিএনপি নেতা শামা ওবায়েদ। তিনি মনে করেন, বিএনপি’র ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই একটিপক্ষ দলটির নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করছে। শুরু থেকেই এ বিষয়ে আমাদের দলের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। দলের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেন কেউ এসবের সঙ্গে যুক্ত না হয়। তারপরও আমরা লক্ষ্য করছি যে, এক শ্রেণির লোক বিএনপির নাম ব্যবহার করে এ ধরনের অপকর্ম করছে, বলেন শামা ওবায়েদ। বিএনপির নাম ব্যবহার করে কেউ চাঁদা চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা, লুটপাট ও চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠতে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় গত দেড় মাসে পটুয়াখালী, নেত্রকোণা, খুলনাসহ বেশকিছু জেলায় শতাধিক নেতাকর্মীকে শোকজ নোটিশ প্রদান, দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি, এমনকি বহিষ্কারও করেছে বিএনপি।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স